প্রকাশিত: Mon, Mar 25, 2024 12:42 PM
আপডেট: Tue, Jun 24, 2025 9:25 AM

[১]কম দামে গরুর মাংস বিক্রি সম্ভব নয়: ভোক্তার ডিজি [২]৫৯৫ টাকাতেই বিক্রি করবো: খলিল

শিমুল চৌধুরী ধ্রুব: [২] রোববার জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ের নতুন সভাকক্ষে ব্যক্তি পর্যায়ে সাশ্রয়ী মূল্যে গরুর মাংস বিক্রি বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ. এইচ. এম. সফিকুজ্জামান বলেছেন, গরুর মাংস বিক্রেতা খলিল, নয়ন ও উজ্জ্বল এতদিন লোকসান দিয়ে গরুর মাংস বিক্রি করেছেন। গরুর দাম বেড়ে যাওয়ায় বর্তমানে মাংসের দামও বেড়ে গেছে। তাদের পক্ষে কম দামে আর মাংস বিক্রি করা সম্ভব নয়। এ পরিস্থিতিতে তারা কি করবেন, এটি সম্পূর্ণ তাদের সিদ্ধান্ত।

[৩] ভোক্তার ডিজি বলেন, বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মাস অ্যাসোসিয়েশন এক মাসের জন্য ৬৫০ টাকা দাম বেঁধে দেয়ার পর চলতি বছরের ১০ জানুয়ারি থেকে আবারও বাড়তে শুরু করে মাংসের দাম। 

[৪] তিনি বলেন, রমজানের আগে খলিল-নয়নদের দোকানে উপচেপড়া ভিড় ছিল। মাংস কিনতে ঢাকার বাইরে থেকে মানুষ এসেছে তাদের দোকানে। সেখানে পুলিশ পর্যন্ত মোতায়েন করা হয়েছিল। এর আগে খলিলকে মৃত্যুর হুমকি পর্যন্ত দেয়া হয়েছিল। রাজশাহীতে কম দামে মাংস বিক্রি করায় একজনকে খুন করা হয়েছিল।

[৫] এই সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন খলিল গোস্ত বিতানের মালিক খলিলুর রহমান। তিনি ৫৯৫ টাকায় গরুর মাংস বিক্রি অব্যাহত রাখার কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, আমি এখন থেকে সকাল ৭টায় দোকান খুলে বিকেল ৩টা পর্যন্ত মাংস বিক্রি করবো। আগামী ২০ রমজান পর্যন্ত প্রতিদিন ২০টা করে গরু বিক্রি করা হবে। 

[৬] সংবাদ সম্মেলনে খলিলুর রহমানের পাশাপাশি গরুর মাংস বিক্রেতাদের মধ্যে মিরপুরের মোহাম্মদ উজ্জ্বল ও পুরোনো ঢাকার নয়ন আহমেদও উপস্থিত ছিলেন। তারাও সরকারি মূল্যের চেয়ে কম দামে মাংস বিক্রির প্রতিশ্রুতি দেন। কৃষি বিপণন অধিদপ্তর গরুর মাংসের মূল্য নির্ধারণ করেছে প্রতি কেজি ৬৬৪ টাকা।

[৭] নয়ন আহমেদ জানান, তিনি প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি করেন ৫৭০ টাকায়। আর বাছাই করা মাংসের দাম পড়ে ৬৫০ টাকা। সম্পাদনা: ইকবাল খান



[১]বনানীর গোডাউন বস্তিতে আগুনে পুড়ে গেলো ২০০ ঘর


সুজন কৈরী: [২] রাজধানীর বনানী গোডাউন বস্তিতে রোববার বিকেল ৪টার দিকে আগুনের সূত্রপাত হয়। ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সের ১০টি ইউনিট গিয়ে দেড় ঘণ্টার চেষ্টায় বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিসকে সহায়তা করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও পুলিশ। 

[৩] ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে অগ্নিকাণ্ডের কারণ ও হতাহতদের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। আগুনের কারণ ও ক্ষয়ক্ষতি জানতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।

[৪] আগুনে বস্তিন প্রায় ২০০টির মতো ঘর পুড়ে গেছে দাবি করেছেন বস্তিবাসীরা। এর মধ্যে রয়েছেন তৃতীয় লিঙ্গের সদস্যরাও। আগুনে সব কিছু পুড়ে যাওয়ায় ধ্বংসস্তূপেই দাঁড়িয়ে ক্ষতিগ্রস্ত বস্তিবাসীরা ইফতার করেছেন। 

[৫] বনানী গোডাউন বস্তি ঘুরে দেখা গেছে, অশ্রুভেজা চোখে দু’টি পেঁয়াজু দিয়ে পুড়ে যাওয়া ধ্বংসস্তূপের পাশে দাঁড়িয়ে ইফতার করছেন আব্দুল হালিম নামের এক ব্যক্তি। কান্নাজরিত কণ্ঠে তিনি বলেন, ভেবেছিলাম প্রতিদিনের মতো কাজ থেকে ফিরে ঘরে ইফতার করব। কিন্তু আগুন আমার সবকিছু ছারখার করে দিয়েছে। সারাদিন রোজা রেখেছি, আগুনের সময় অনেক চেষ্টা করেছি ঘরটিকে বাঁচানোর জন্য। কিন্তু পারিনি। এখন পুরে যাওয়া ঘরের সামনে দাঁড়িয়ে ইফতার করতে হচ্ছে।

[৬] আসাদুল ইসলাম নামের আরেকজন ক্ষতিগ্রস্ত বস্তিবাসী বলেন, রোজা শুরু হওয়ার পর থেকে প্রতিদিনই ঘরে ইফতার করি। কিন্তু আজকে যে পুরা ঘরের সামনে দাঁড়িয়ে ইফতার করতে হবে, সেটি কখনো ভাবিনি। আমার সবকিছু শেষ হইয়া গেছে। ঘরে থাকা টাকা-পয়সা, মালামাল সবকিছু পুইড়া আগুনে ছাই হইয়া গেছে।

[৭] আব্দুল হালিম ও আসাদুল ইসলামের মতো অনেক ক্ষতিগ্রস্তদেরই বস্তির এক কোণে দাঁড়িয়ে ইফতার করতে দেখা গেছে। সাজানো গোছানো সংসার আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যাওয়া দেখে অনেকেরই চোখ বেয়ে পানি পড়ছে। 

[৮] ক্ষতিগ্রস্ত তৃতীয় লিঙ্গের সদস্য লিমা বলেন, আমরা ১০ জন হিজড়া দুটি ঘরে থাকতাম। আগুনের সময় আমাদের কয়েকজন ঘরেই ছিল, বাকিরা বাইরে ছিলাম। খবর পেয়ে এসে দেখি আমাদের ঘরসহ সবকিছু পুড়ে গেছে। আমরা ভিক্ষা করে অনেক কষ্ট করে একটি একটি করে জিনিসপত্র কিনেছিলাম। আগুনে আমাদের সবকিছু শেষ হয়ে গেল। এখন আমরা কোথায় যাব, কী করব ভেবে পাচ্ছি না।

[৯] লিমার মতো সর্বস্ব হারানো তৃতীয় লিঙ্গের আরেক সদস্য আফরোজা বলেন, আগুনের সময় ঘরের ভেতরে ছিলাম। প্রথম একটি দোকানে আগুন লাগে। দৌড়ে ঘর থেকে বের হই। মুহূর্তের মধ্যে আগুন পুরো বস্তিতে ছড়িয়ে পড়ে। ভেতর থেকে কিছুই আনতে পারিনি। আমাদের সবকিছু শেষ হয়ে গেছে। সম্পাদনা : কামরুজ্জামান